পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
পৃথিবীজুড়ে বিপন্নপ্রায় প্রজাতির ডলফিন ইরাবতী। দেশের উপকূলীয় সমুদ্রসীমার নোনা জলে এদের আবাসস্থল ও বিচরণ। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার জাহাজমারা সমুদ্র সৈকতের তীরের বালুচরে ভেসে এসেছে এমন প্রজাতির একটি ডলফিন।
গত শুক্রবার সকালে দেখাগেছে, জাহাজমারা সৈকতের বালুচরের বীচে বিশাল আকৃতির একটি মৃত ডলফিন পড়ে আছে। স্থানীয় জেলেরা বলছেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে জোয়ারে ভেসে এসে বালুচরে আটকা পড়েছে মৃত ডলফিনটি। জেলেদের জালে আটকা পড়ে ৩-৪ দিন আগে ডলফিনটি মারা যেতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন। জাহাজমারা সংলগ্ন ভূইয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে এইটা (ডলফিন) জাহাজমারা পড়ে থাকতে দেখেছি। রাতে শিয়াল-কুকুরে হানাও দিয়েছে মনে হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডলফিনের সকল প্রজাতির মধ্যে ইরাবতী গুরুত্বপূর্ণ। প্রতাজিগতভাবে স্তন্যপায়ী হলেও এই প্রজাতির ডলফিনের সঙ্গে মানুষের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। মানুষের মতই এদের রক্ত গরম। একটি পরিবারের মতোই নদ-নদী ও সাগরে দলবেঁধে বিচরণ করে। একটি জরিপের প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশে ডলফিন টিকে আছে। কিন্তু ডলফিনের বসতি এলাকায় মানুষের যে উৎপাত বেড়েছে, এতে ভবিষ্যতে ডলফিন টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, একোয়াকালচার এন্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদের শিক্ষক মীর মোহাম্মদ আলী যুগান্তরকে বলেন, ইরাবতী ডলফিন সারা পৃথিবীতে একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি। একমাত্র বাংলাদেশেই এই প্রজাতিটি সর্বোচ্চ পরিমাণ পাওয়া যায়, সেহেতু এদের রক্ষার জন্য আমাদের এগিয়ে আসা দরকার। সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রশাসনের মাধ্যমে মেরিন প্রটেক্টেড অঞ্চল করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। পাশাপাশি জনগণ ও জেলেদের সচেতনতার জন্য কর্মসূচি হাতে নেওয়া প্রয়োজন।
তিনি যুগান্তরকে আরও বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী তিমি বা ডলফিন হত্যার দায়ে কেউ অভিযুক্ত হলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদÐ অথবা তিন লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদÐ হতে পারে। তিমি বা ডলফিনের দেহাবশেষ সংগ্রহ করলে তার জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের সাজা অথবা এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদÐ হতে পারে।