শেরপুর প্রতিনিধিঃ
শেরপুর ঝিনাইগাতী এলাকায় মাহমুদা ও তাঁর সন্তানদের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলার পরও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় মাহমুদার স্বামী আলামিন।
মাহমুদা বেগম শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার নাচনমহুরী গ্রামের মো: আল আমিনের স্ত্রী। মাহমুদা বেগম ও আল আমিনের ঘরে এক মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়ে অনন্যা আক্তার মীম (১৬) আয়নাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে এবং ছেলে ছোয়াদ (১১) ঐ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। এছাড়াও মাহমুদা বেগমের বৃদ্ধা শাশুড়ি একই বাড়িতে তাঁদের সঙ্গে বসবাস করেন।
মাহমুদা বেগম বলেন, আমার স্বামী আল আমিন সংসার চালানোর তাগিদে বহু বছর যাবত ঢাকাতেই রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। তিনি ৩-৪ মাস পরপর বাড়িতে আসেন।
মাহমুদা বেগম বলেন, ৩০ আগস্ট বিকাল আনুমানিক পাঁচটার দিকে বাড়িতে আমার স্বামী ছাড়া আর কোন পুরুষ মানুষ না থাকাই নাচনমহুরী গ্রামের আমাদের প্রতিবেশী মোঃ শহীদুল্লাহর ছেলে বাবু মিয়া, শহীদুল্লাহর স্ত্রী হাওয়া বেগম, ইউসুফ আলীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী সুজেদা বেগম, শহীদুল্লাহ ও ভুন্ডলী বেগম সহ আরো কয়েকজন একটি ছাগলের দূর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার বাড়িতে ঢুকে। এবং আমাকে বলে আমি নাকি তাদের একটি ছাগলকে আঘাত দিয়েছি। যার কারণে তারা আমার কাছে সেই ছাগলের জরিমানা দাবী করেন।
আমি তাঁদেরকে বললাম আমি এই ছাগল সম্পর্কে কিছুই জানিনা। এমনকি আমি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হয়না। কিন্তু তারা দলবল সহ জোরপূর্বক সেই ছাগলের দোষারোপ আমার উপর করতে থাকে। এক পর্যায়ে হাওয়া বেগম সেই ছাগলের দড়ি ও আমার উড়না দিয়ে আমার গলাতে ফাঁস দিয়ে ধরে। মনোয়ারা বেগম আমার গলাতে উরনা এবং দড়ি দিয়ে ফাঁস দিয়ে ধরার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের সঙ্গে যারা এসেছিল তারা সবাই এলোপাথারি ভাবে আমাকে, আমার শাশুড়িকে এবং আমার দুই সন্তানকে মারপিট করতে থাকে। আমি তখন চিৎকার করলে মনোয়ারা আমার মাথায় তার হাতে থাকা লোহার শাবল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে। আঘাত করার সঙ্গে সঙ্গে আমি মাটিতে লুটে পড়ি এবং বেহুশ হয়ে যাই।
ঐ সময় আমার মেয়ে অনন্যা কে মারধর করে এমনকি তার পরনের জামা কাপড় ছিড়ে ফেলে। এমনকি আমার ১১ বছর বয়সের ছেলেটিকেও সবাই মিলে অমানবিক নির্যাতন করে।
মাহমুদা বেগম বলেন, আমাদের সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরধরে বাবু মিয়া সহ এসব খুনিরা আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আমার উপর হামলা করে।
তারপর এলাকাবাসী, আমি সহ আমার পরিবারের সবাইকে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এবং আমার মাথায় পাঁচটি সেলাই দেন। এখনো আমাদের সবার চিকিৎসা চলমান।
মাহমুদা বেগম আরো বলেন, বাবু মিয়া সহ তাঁর দলের সবাই বলতেছে, তারা আমাদের পরিবারের সবাইকে ইয়াবা,গাজা,বাবা,হিরোইন ও আমি এবং আমার মেয়ে দেহ ব্যবসা করি এসব সহ অন্যান্য ব্যবসায় জরিয়ে আমাদেরকে এই এলাকা থেকে উৎছেদ করে দিবে বলে হুমকি দিয়ে আসছে। এছাড়াও আমাদের পরিবারের সবাইকে প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছে।
তাই আমার পরিবারের সবার জীবন এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগতেছে। আমি এলাকাবাসী ও প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মাহমুদা বেগমের ছেলে ছোয়াদ ও মেয়ে অনন্যা বলে, ঘটনার দিন এসব সন্ত্রাসীরা আমার মাকে মেরে ফেলার জন্য আমাদের বাড়িতে ঢুকে এসব কর্মকাণ্ড করে। তাই আমরা এসব সন্ত্রাসীদেরকে দ্রুত গতিতে গ্রেফতার করে বিচারের দাবি করছি।
মাহমুদা বেগমের স্বামী আল আমিন বলেন, বাবু সহ এসব সন্ত্রাসীরা আমার অবর্তমানে আমার বাড়িতে ঢুকে যে অমানবিক কাজ করেছে এতে আমার স্ত্রী,মেয়ে,ছেলে ও আমার বৃদ্ধা মায়ের জীবন এখন হুমকির মুখে। এরা যে কোনো মুহুর্তে আমার পরিবারের যে কাউকে খুন করা সহ যে কোনো বিপদে ফেলতে পারে।
এ বিষয়ে বাবু মিয়ার সাথে কথা বললে, তিনি বলেন ঘটনার দিন মাহমুদা বেগমের সঙ্গে কোনো প্রকার মারামারি হয়নি। শুধু মাত্র কথা কাটাকাটি হয়েছে। মাহমুদা বেগম যা বলেছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা।
তাই আমি নিরুপায় হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। যাতে এসব সন্ত্রাসীদের দ্রুত গতিতে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে পারে।
এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী থানা থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, আসামীদের দ্রুত গতিতে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
Tags: ঝিনাইগাতী