মো:মুক্তার হোসেন,রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোরে প্রায় ৪ কোটি টাকার রাস্তার কাজ ফেলে উধাও হয়েছেন ঠিকাদার বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে পৌর বাসির দুর্ভোগের শেষ নেই। আবার কোন কোন এলাকায় কাজ শুরু করেননি ঠিকাদার। বছর পার হলেও ঠিকাদার আর পৌর কর্মকর্তাদের এমন দায়িত্বহীনতাঁর কারনে ক্ষোভে ভাসছে জনসাধারণ।
জানা গেছে গত ২০১৯ সালের দিকে জলোবায়ু প্রকল্পের আওতায় তানোর পৌরসভাতে বরাদ্দ প্রায় ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৪৭ টাকা। কাজের দরপত্র আহবান করা হয় ওই সালের মার্চ মাসে। দরপত্র আহবান করা হলেও মেয়র মিজান নিজ ক্ষমতায় মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে পুরা কাজ দেন রাজশাহী শহরের হাসনাথ নামের এক ঠিকাদারকে। অথচ অনেক ঠিকাদার কাজ পাবার আসায় ৯হাজার টাকা দিয়ে শিডিউল ক্রয় করলেও কোন ধরনের লটারি ছাড়াই এক ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার কারনে বাকিরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযাগও করেন। এছাড়াও এসব কাজ সহ মেয়র মিজানের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে কাউন্সিলররা দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযাগ দেন। অভিযাগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে আসলে রহস্যজনক কারনে সবাই নিরব হয়ে যায়।
সুত্র মতে এই কাজ চারটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে গোকুল থেকে তালন্দ রাস্তায় এবং গুবিরপাড়া গ্রামে ইট খোয়া ফেলা হয় চলতি বছরের মার্চের বা লকডাউনের আগে। ইট খোয়া ফেলা অবস্থায় দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে পড়ে রয়েছে। কাজগুলো হল কুঠিপাড়া গ্রামের জালালের বাড়ি থেকে কাশেম চেয়ারম্যানের মার্কেট পর্যন্ত ব্যয় ৪৯ লাখ ৬০হাজার ৪৬৫ টাকা। অথচ এরাস্তায় এখনো কোন ধরনের কাজ শুরু হয়নি। গোকুল থেকে তালন্দ বাজার পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মাণ, এখানে ইট খোয়া ফেলা রাখা হয়েছে, ব্যয় ১ কোটি ২৪ লাখ ৭২ হাজার ৭৯৩ টাকা। ওই এলাকার বাবুল নামের এক রড মিস্ত্রি জানান রাস্তার কাজ শেষ না করার জন্য চরম ভাগান্তি নিয়ে চলতে হচ্ছে। কাশেম বাজার থেকে মরিজাম মসজিদ ও কালীগঞ্জ বাজার থেকে হাবিব নগর, ব্যয় ৮০ লাখ ৮ হাজার ৮২৩ টাকা, কোন কিছুই শুরু হয়নি । গুবিরপাড়া গ্রামের রাস্তায় ফেলা হয়েছে নিম্মমানের ইট খোয়া, ব্যয় ১৭ লাখ ৫ হাজার টাকা। তালন্দ উপর পাড়া আলতাব মাষ্টারের বাড়ি এবং গুবিরপাড়া বাবুলের বাড়ি পর্যন্ত ব্যয় সমপরিমাণ।
একাধিক পৌরবাসি জানান বছর পার হয়ে যাচ্ছে তারপরেও কাজ হচ্ছেনা। ইট খোয়া ফেলে রাখার জন্য সমস্যা নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
পৌরসভার বেশ কিছু কর্মচারীরা জানান আমরা যতটুকু জানি কাজের বিল তোলা প্রায় হয়ে গেছে। আবার অনেকে জানান হয়তো বা আংশিক তুলেছে বিল।
ঠিকাদার এসক ট্রেডারসের মালিক সালমান, মিলন কনস্ট্রাশনের মালিক মিলন জানান শিডিউল ক্রয় বিডিসহ যাবতীয় খচর মিলে প্রতিটি ঠিকাদারের প্রায় ৭০ হাজার টাকা করে লোকসান হয়েছে। মেয়র লুকোচুরি করে কাজ দিবেন তাহলে কেন আমাদেরকে শিডিউল ক্রয় করিয়ে লোকসানে ফেললেন ?এ অন্যায়ের জবাব পৌরবাসি দিবেন। আবার কাজ না করেই প্রায় কাটি টাকার উপর বিল দেয়া হয়েছে বলেও জানান তারা।এসব অনিয়মের জবাব আগামীতে পৌরবাসি দিতে প্রস্তুত আছেন। কারন এত অনিয়ম মানবেনা জনসাধারণ।
কাজ দেখভালের দায়িত্বে এবং পার্টনার থাকা কারয্যসহকারী মাহাবুর জানান একাজ ঠিকাদারের লোকসান হয়েছে। কাজ শেষ হলনা লোকসান কিভাবে হয় জানতে চাইলে তিনি জানান এসব বিষয়ে আপনি বুঝবেন না বলে দায় সারেন।আপনি নাকি পার্টনার আছেন জানতে চাইলে দম্ভোক্তি প্রকাশ করে জানান হ্যা আছি বেশি বেশি করে লিখেন, কিছুই হবেনা। তবে একাজের সাথে তিনিও নাকি পার্টনার আছে বলেও অভিযাগ রয়েছে।
কাজের বিষয়ে জানতে পৌর সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীরের ব্যাক্তিগত ০১৭১৫-৪০৮৮২২ নম্বরে আজ রবিবার নয়টার দিকে ফোন দিয়ে জানতে চাওয়া হয় এতগুলো ঠিকাদার শিডিউল কেনার পর শুধুমাত্র এক ঠিকাদারকে নিয়ম আছে কিনা তিনি জানান কারচুপি করে দেয়া হয়েছে আপনার কাছে প্রমান আছে, লটারি না করে একজনকে কাজ দেওয়াটাই তা প্রমান,এবং তিনি কাজ ফেলে রেখেছেন করছেননা কেন প্রশ্ন প্রমানের কথা বলে সংযোগ বিছিন্ন করে দেন।
ঠিকাদার হাসনাথের ০১৭২৪-৩৩৮৮৫১ মোবাইল নম্বরে নয়টা সাত মিনিটের দিকে ফোন দেয়া হলে তিনিও রিসিভ করননি।
পৌরসভার আগামী নির্বাচেন আ”লীগর সম্ভাব্য প্রার্থী আবুল বাসার সুজন জানান এসব কাজের বিষয়ে কাউন্সিলর মমেনা আহম্মদ অনেক জায়গায় অভিযোগ করেছেন। বছর পার হয়ে যাচ্ছে আর কাজ শেষ হচ্ছেনা নিশ্চয় কোন কিছু রহস্য লুকিয়ে আছে। তবে আমি চাই সঠিক ভাবে কাজ হাক।
এবিষয়ে বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক মেয়র মিজানুর রহমান মিজানের ব্যাক্তিগত ভাবে ফোন দেয়া হলে তিনি জানান ফান্ডে টাকা নাই এজন্য কাজ বন্ধ আছে, কবে কাজ শুরু হবে জানতে চাইলে জানান টাকা আসলেই শুরু হবে কাজ।