লালমনিরহাটে করোনা সংক্রমণ রোধে ৩ উপজেলার ৩৪টি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আদিতমারী উপজেলায় ৮টি, হাতীবান্ধা উপজেলায় ২১টি ও পাটগ্রাম উপজেলায় ৫টি বাড়ির বাসিন্দাদের বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। লকডাউন পরিবারগুলোর অধিকাংশই শ্রমিক শ্রেণির হওয়ায় তাদের মাঝে খাদ্য অভাব দেখা দিয়েছে।
এ ছাড়া জেলায় এ পর্যন্ত ১৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১১ জন আইসোলেশনে আছেন ও ২ জন করোনা মুক্ত হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। জেলায় ক্রমপুঞ্জিভূত হোম কোয়ারেন্টাইনে ২০৬ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ জন, ক্রমপুঞ্জিভূত ১২৯ জন, কোয়ারেন্টাইন ও আইসেলেশন থেকে ছাড়প্রাপ্ত গত ২৪ ঘন্টায় ১ জন, ক্রমপুঞ্জিভূত ২৬৯ জন।
হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের দ. গড্ডিমারী গ্রামে লকডাউন ২১ পরিবারের খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, তারা সবাই শ্রমিক শ্রেণীর। তাদের বাড়িতে জমা টাকা পয়সা বা খাদ্য নেই। ওই পরিবার গুলোকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে যে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে কম। ফলে তাদের মাঝে খাদ্য অভাব দেখা দিয়েছে।
ওই এলাকার লোকজন জানান, লকডাউন পরিবার গুলোর অনেকেই অভাবের কারণে পাহারার দায়িত্বে থাকা গ্রাম পুলিশদের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে বাহিরে কাজ করতে যাচ্ছে।
লকডাউন পরিবার গুলোর মধ্যে একটি ভিক্ষুক পরিবার আছে। ওই ভিক্ষুক মহিলা শুক্রবার গ্রাম পুলিশদের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে ভুট্টা ক্ষেত দিয়ে পালিয়ে ভিক্ষা করতে যায়।
হাতীবান্ধার সিঙ্গিমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দুলু বলেন, আমার ইউনিয়নে ২১ টি পরিবারকে লকডাউন করা হয়েছে। ২১ টি পরিবারেই শ্রমিক শ্রেণীর। তাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তা দিয়ে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। তাদের আরো সহায়তা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিন বলেন, লকডাউনকৃত পরিবারগুলোকে শুক্রবার ০৫ কেজি করে চাল এবং শিশু খাদ্য পৌঁছে দেয়া হয়েছে। শনিবার শাক-সবজিসহ অন্যান্য বাজার তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হবে। করোনা আক্রান্তের ব্যবহারের জন্য আলাদা টয়লেট নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে এবং পরিবারের অন্যান্যদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কাজ গুলো সিংগীমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এর সহযোগিতায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নিয়মিত সকলের খোঁজ রাখা হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন পরিবার গুলোকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।