মো.মহসিন রেজা,শরীয়তপুরঃ
শরীয়তপুরে ২০১৭ সালের ৫ই মে পৌরসভার সাত নং ওয়ার্ডের ধানুকা গ্রামে স্বামী, শাশুড়ী ও শ্বশুরের নির্যাতনে খুন হন কিশোরী বধূ খাদিজা আক্তার বৃষ্টি।বৃষ্টি হত্যা মামলায় ঐ দিনই গ্রেপ্তার হয় প্রধান আসামি একই গ্রামের রাজ্জাক মাদবরের ছেলে রফিকুল ইসলাম। ১১ মাস জেল খেটে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে বেরিয়ে আসে প্রধান আসামী রফিকুল ইসলাম। তিনি ম্যাজিষ্টেট এর কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে খাদিজা আক্তার বৃষ্টিকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে সে ঘটনার লোমহর্ষক বিবরন দেন বৃষ্টির স্বামী রফিকুল ইসলাম।
ভালোবেসে বৃষ্টিকে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পরিবারের অমতে বিয়ে করে রফিকুল। সে ভালোবাসার স্ত্রীকে খুন করে জেল খেটে বেরিয়ে আসা রফিকুল ২০১৮ সালের জুন মাসে শরীয়তপুরের সরকারী গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজে মাষ্টাররোলে অফিস সহকারী পদে চাকুরী পেয়ে যান।
এর ফলে রফিকের পায়ের নিচের মাটি শক্ত হয়ে যায়। যার কারনে মামলার বাদীর উপর প্রভাব খাটিয়ে বৃষ্টিকে হত্যার তিন বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার নেই কোন অগ্রগতি, এখনো আদালতে স্বাক্ষী দিতে সাহস পাননি বাদী পক্ষ।
একজন চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামী জেলা শহরের মহিলা কলেজের মতো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিসের জোরে চাকরী পেলো এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই।
হত্যার স্বীকার বৃষ্টির পরিবারের মাঝে রয়েছে ভয় আর আতংক। তাদের দাবী মেয়েদের কলেজে এরকম একজন লম্পট হত্যাকারীর অপসারন।
এবিষয়ে, সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজের প্রিন্সিপাল রেজাউল করিম বলেন, রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামী আমি জানতামনা, আমাদের এখানে সে অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে আছেন, তাকে চাকরী থেকে অব্যহতি দেওয়া ব্যাবস্থা করবো।
উল্লেখ্য,যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় কিশোরী নব বধূ খাদিজা আক্তার বৃষ্টিকে হত্যা করে। স্বামী রফিকুল ইসলাম (১৯)সহ তার পরিবারের লোকজন মিলে গত ৫মার্চ দুপুরে শ্বাসরোধে তাকে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে রফিক। ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ধানুকা গ্রামে। হাসেম ব্যাপারীর মেয়ে খাদিজা আক্তার শরীয়তপুর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। একই গ্রামের রাজ্জাক মাতবরের ছেলে রফিকুল ইসলাম ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক থাকায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই রফিকের পরিবার যৌতুকের দুই লাখ টাকার জন্য খাদিজাকে চাপ দিতে থাকে। তার অটোরিকশা চালক বাবা ওই টাকা দিতে পারেননি। টাকা না পেয়ে তারা খাদিজার ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে খাদিজার মৃত্যু হয়।