কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
শহীদ বুদ্ধিজীবি স্বরনে কেরানীগঞ্জ গ্রাজুয়েট সোসাইটির বিনম্র শ্রদ্ধা। দিবস উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোর মিছিলের মাধ্যমে ১৯৭১ এর ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানী দোসরদের হাতে নিহত বুদ্ধিজীবিদের স্মরন করলো দেশের সব চেয়ে বড় সামাজিক সংগঠন কেরানীগঞ্জ গ্র্যাজুয়েট সোসাইটি।
দিবসটি পালন উপলক্ষে ১৩ ডিসেম্বর রবিবার বিকালে কেরাণীগঞ্জ উপজেলা শহীদ মিনারে আলোচনা সভায় সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা,কেরাণীগঞ্জ গ্র্যাজুয়েট সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম মামুনের নেতৃত্বে আয়োজিত এ আলোর মিছিলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কামরুল হাসান সোহেল, গ্রাজুয়েট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, অধ্যাপক প্রদিপ কুমার হালদার, কোন্ডা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, গ্রাজুয়েট সোসাইটির গভর্নিং বডির সদস্য জাকির আহমেদ সভাপতিত্ব করেন মুজাহিদুল ইসলাম মামুন। করোনা মহামারীর কারণে এবার সীমিত পরিসরে করা হয় এবারের আয়োজন। দিনের আলো নিভে সূর্যাস্ত হলে, যখন অন্ধকার নেমে আসে ঠিক তখনই মোমবাতি প্রজ্বলন করে আলোর মিছিলের মাধ্যমে ৭১ এ শহীদ বুদ্ধিজীবিদের স্মরণ করা হয় ।
কেরানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী, সাংবাদিক, সামাজিক ব্যাক্তিত্ব ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত আলোর মিছিলটি উপজেলা শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সভাস্থলে গিয়ে শেষ হয়। শহীদ মিনারের শহীদ বেদীতে পুস্পার্পনের মাধ্যমে ৭১’এর শহীদ বুদ্ধিজীবিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে
কেরানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কামরুল হাসান সোহেল বলেন,আমাদের জাতীয় ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ইতিহাসের মহানায়ক। স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তান বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জেতা সম্ভব না, তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দূর্বল এবং পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানী বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিজ নিজ গৃহ হতে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। এরপর ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভের মধ্য দিয়ে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামের নতুন একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ।
প্রতিষ্ঠাতা, সভাপতির সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ম. ই মামুন বলেন, প্রতিবছর বাঙালী জাতির সূর্য সন্তান শহীদদের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের লক্ষ্যে কেরানীগঞ্জ গ্র্যাজুয়েট সোসাইটির উদ্যোগে কেরানীগঞ্জের সর্বস্তরের জনগনকে সাথে নিয়ে আমরা আলোর মিছিলসহ নানান আয়োজন করে থাকি। করোনার কারনে আমাদের এবারের আলোর মিছিল আয়োজন সীমিত করা হয়েছে। তিনি একটি উক্তি থেকে বলেন,” শিক্ষাই চেতনা,চেতনাই বিপ্লব, মুক্তিই চেতনা” মুক্তি শিক্ষা চেতনা বিপ্লবের মাধ্যমে চেতনা দেখা,আজ আমরা নিজেদের চেতনা হারিয়ে যেতে পারি না। এই চেতনা লালন করে ১৪ ডিসেম্বারের স্থলে একদিন আগে ১৩ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবিদের স্বরন করি। তিনি বলেন, আজকে একটি সার্থ নেসি মহল ধর্মকে অপব্যাখ্যা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আঘাত হেনেছি। তিনি আরো বলেন,ইসলাম আধুনিক ধর্ম, ইসলাম কখনো গোমড়ামীর প্রাধান্ন দেয় না। আমরা শুনেছি মোসলমানদের চরিত্র দেখে অন্যান্য ধর্মের মানুষ শিক্ষা নিত। আনদোলনের নামে নৈরাজ্য, ফেসবুক, ইউটিউব, মিডিয়াতে তাদের বডি ল্যাংঙ্গুয়েজ দেখে অন্যান্য ধর্মে লোক তো দূরে থাক, মুসলমানকে দেখে মুসলমান ভয় পাচ্ছে৷ সেই সূত্রে বলতে চাই সবসময় পরাজিত শক্তি যুগযুগ ধরে শৃঙ্খল ভাঙবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ সব সময় শৃঙ্খলা ভেঙে মুক্ত আকাশে বিচরণ করেছে।
তিনি বলেন,৪৭ দেখেছি ৫২ দেখেছি,৭১ও ৯০ এর সেই বাধা চুরমার করে ভেঙে, চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে বাংলাদেশ তার নিজের গতিতে এগিয়ে চলছে। আবারো ২০২০ সালে এসে ৭১ এর ধর্মের লেবাসধারীরা এই দেশকে অন্ধকাছন্ন করে পিছনে ফেলে দিতে চায়। আমরা ইনশাআল্লাহ, আবারো এগিয়ে যাবো এদেশের সূর্য যেটা উদিত হয়েছে, সেটা অম্লান থাকবে। আমরা আলোর মিছিলের মাধ্যমে তাদেরকে একটি ম্যাসেজ দিতে চাই। বাংলাদেশের মানুষ আর অন্ধকারে ফিরে যেতে চায় না, বাংলাদেশের মানুষ কুসংস্কারে থাকতে চায় না। বাংলাদেশের মানুষ আলোকিত মানুষ, আর আলোকিত মানুষ আলো ছড়াবে, এই আলোর মাধ্যমে আমাদের আগামী প্রজন্ম একটি নতুন সকাল পাবে। এছাড়া আমন্ত্রিত অতিথির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অদিত্য মল্লিক, ফাহমিদা মনি, সাইফুল ইসলাম শরীফ, মো: রাহাত সহ কেরানীগঞ্জ গ্রেজুয়েট সোসাইটির অন্যান্য সদস্যরা। মোঃ এরশাদ হোসেন