নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কর্নেল (অব:) ফারুক খান এমপি বলেছেন, রাজনীতিতে কিছু অনৈতিক লোকের প্রবেশের কারণে রাজনীতি আজ কুলষিত ও কলংকিত হচ্ছে। শহীদ ময়েজউদ্দিনের মতো আদর্শবান রাজনৈতিক নেতার বড় প্রয়োজন। শহীদ ময়েজউদ্দিন ও শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের আদর্শ তরুণ প্রজন্মকে উজ্জীবীত করবে।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩৬ম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে “সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে শান্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধি ও পেশাজীবীদের ভূমিকা” শীর্ষক এক আলোচনা ও স্মরণ সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কর্নেল (অব:) ফারুক খান এমপি, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন।
১৯৮৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের কালীগঞ্জে সেনাশাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন শহীদ হয়েছিলেন। তার কন্যা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও ময়েজউদ্দিন স্মৃতি পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মেহের আফরোজ চুমকী এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও শহীদ ময়েজউদ্দিন স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান। আলোচনায় অংশ নেন তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক খগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম, পেশাজীবী নেতা আব্দুল মালেক সরকার, মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, নুরুল আমিন সিকদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফারুক খান এমপি বলেন, রাজনীতিতে কিছু অনৈতিক লোকের প্রবেশের কারণে রাজনীতি আজ কুলষিত ও কলংকিত হচ্ছে। শহীদ ময়েজউদ্দিনের মতো আদর্শবান রাজনৈতিক নেতার বড় প্রয়োজন। তিনি বলেন, শহীদ ময়েজউদ্দিন ও শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের আদর্শ তরুণ প্রজন্মকে উজ্জীবীত করবে। তাদের নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেন, ছয় দফা আন্দোলন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের বিজয় পর্যন্ত তিনি এক অনবদ্য ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক জীবনে লোভ, সুবিধাবাদীতা ও কাপুরুষতা তাকে কখনো স্পর্শ করেনি। গণমানুষের স্বার্থকে তিনি সবসময়ে মর্যাদা দিয়েছেন।
মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ময়েজউদ্দিনই প্রথম শহীদ হয়েছিলেন। দেশ-বিদেশে খ্যতিমান একজন আইনজীবী, সমাজকর্মী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী শহীদ ময়েজউদ্দিন ১৯৩০ সালের ১৭ মার্চ গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বড়হরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সাহসী ও পরোপকারী রাজনীতিবিদ, ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ময়েজউদ্দিন স্বাধীনতা পদক লাভ করেন। তিনি ঐতিসাহিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা করার জন্য গঠিত ‘মুজিব তহবিলের’ও আহবায়ক ছিলেন। একজন বিচক্ষণ আইনজীবী ও রাজনীতিক হিসেবে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে ওই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন। শহীদ ময়েজউদ্দিন বৃহত্তর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে গাজীপুর-কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা থেকে যথাক্রমে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এবং জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। একজন শিক্ষক ও সমাজসেবক, একজন জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদ এবং আইনজীবী হিসেবে শহীদ ময়েজউদ্দিনের কর্মজীবন ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত আদর্শ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখাবে।