পঞ্চগড়ের বোদায় মাঠজুড়ে এখন চলছে সোনালী আমন ধানের কাটা মাড়াই উৎসব। শুরু হয়েছে আমন ধান কাটার মৌসুম। দলবদ্ধভাবে এখন ধানকাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ উপজেলার কৃষকেরা। পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি নারীরাও ধান কাটার কাজে নিয়োজিত হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বোদা উপজেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৪ হাজার ৩০ হেক্টর। কষ্টের ফসল ঘরে তোলার আনন্দে কৃষকদের মনে বেশ উচ্ছ্বস দেখা যাচ্ছে, কারণ এই ফসলের উপরই নির্ভর করছে তাদের বছরের আয়ের একটি বড় অংশ। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ইতিমধ্যে অনেক কৃষকরা তাদের মাঠের পাকা আমন ধান কেটে ঘরে তুলেছে।
কৃষকরা জানান, ভালো রৌদ্র হওয়ার ফলে আমরা ধান কাটতে পারছি। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় অধিকাংশ গ্রামে কৃষকরা আমন ধানের আবাদ করেছে। প্রতি বিঘাতে ১৮/২০ মণ ধান হবে বলে কৃষকরা ধারণা করেছে।
উপজেলার ময়দানদিঘী, ঝলইশালশিরী, বেংহারী বনগ্রাম, মাড়েয়া বামনহাট, বড়শশী, কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ, সাকোয়া, চন্দনবাড়ী, পাঁচপীর ইউনিয়নের বেশ কয়টি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও ধান কাটা কাজে ব্যস্ত সময় পার করেছেন।
বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের ছেনতাইপাড়া গ্রামের ওসমান গণি, ভক্তের বাড়ী গ্রামের শহিদুল ইসলাম, তেপুকুরিয়া গ্রামের পলাশ, মকুল সঞ্চয় সহ অনেক কৃষকরা জানান। তারা বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরে বৃষ্টির পানি কম থাকলেও ফলন ভালো হয়েছে। এবার তারা ধানের ফলন প্রায় ১৮/২০ মণ ধান পাবে বলে ধারণা করচ্ছেন। তাদের মতে এখন পর্যন্ত ধানের দামও মোটামুটি ভালো। কিন্তু কীটনাশক, সেচ খরচ, সার ও কৃষি শ্রমিকের দাম বেশি। এতে উৎপাদন খরচ বেশি হয়েছে। সরকার যদি কীটনাশক, সেচ খরচ ও সারের দাম কমায় তাহলে আমরা কৃষকরা লাভবান হতে পারব। তাই আমাদের টিকিয়ে রাখতে সরকারের এদিকে নজর দেওয়া দরকার।
বর্তমানে বাজারের ধানের দাম ভালো। বাজারে আমন ধান ১২শ ৫০ থেকে ১২শ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বোদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহম্মেদ রাশেদ উদ নবী বলেন, এই উপজেলায় ২৪ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছে কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে কোন কোন এলাকায় কৃষকরা তাদের মাঠের পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছে।